কৃষকের জানালা

দৌলতপুরের সবজি আবাদি এলাকাতেই সবজির মুল্য লাগামহীন!

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৭ অক্টোবর, ২৩ আপডেট : ২২ অক্টোবর, ২৪

সবজি চাষ করে নিজ উপজেলার চাহিদা পূরণ করে অন্যত্র সরবরাহ করতে সক্ষম কুষ্টিয়ার দৌলতপুর। সবজির ভান্ডার খ্যাত এই উপজেলায় এখন লাগামহীন সবজির দাম। এমন পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষেরা। এদিকে দাম বাড়ায় কমেছে বিক্রি। কেজি দর ছেড়ে এখন পোয়া, গ্রামেই কিনছেন ক্রেতারা।
এদিকে খুচরো বিক্রেতারা বলছেন, সবজির দাম বাড়ায় বিনিয়োগ বাড়িয়েছেন তাঁরা। তবে লাভ বাড়েনি, কমেছে বিক্রির হার। দাম বাড়ার ফলে ক্রয় ক্ষমতা হরিয়ে কেজি ধরে কেনা সবজি পোয়া অথবা গ্রামে কিনছেন ক্রেতারা।
উপজেলা কৃষি বিভাগ বলছে, প্রতি বছর এই উপজেলায় সবজি চাষ হয় ৬ হাজার হেক্টর জমিতে। সেখান থেকে প্রতি বছর সবজি উৎপাদন হয় ১ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিকঁন। স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে অবশিষ্ট সবজি উপজেলার বাইরে যায়। উপজেলার তারাগুনিয়া ও খলিশাকুন্ডি বাজার থেকে দিনে কয়েক কোটি টাকার সবজি অন্যান্য জেলা ও উপজেলায় পাঠানো হয়।
৪৬১ বর্গ কিলোমিটার কৃষি নির্ভর এই উপজেলায় প্রায় ৫ লাখের বেশি মানুষের বসবাস। যেখানে একজন মানুষের ন্যূনতম দৈনিক সবজি প্রয়োজন ২৫০ গ্রাম, সেখানে উপজেলাটির দৈনিক চাহিদা ধরা হয়েছে আনুমানিক ১২৫ মেট্রিক টন যার বাৎসরিক চাহিদা ৪৫ হাজার ৬২৫ মেট্রিক টন।
শুক্রবার সকালে উপজেলার বড় পাইকারি সবজির বাজার তারাগুনিয়া বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আলু পাইকারি ৫৩ ও খুচরা ৫৫-৬০, পেঁয়াজ পাইকারি ৯২ ও খুচরা ৯৫-১০০, মরিচের পাইকারি ১০০ ও খুচরা ১১৫-১২০, রসুন পাইকারি ২২০ টাকা খুচরা ২৩০-২৪০, কচু পাইকারি ৬০-৬৫ ও খুচরা ৭৫-৮০ টাকা।
শীতকালীন সবজি ফুলকপির পাইকারি দাম ৬০ টাকা ও খুচরা ৭০ টাকা, যথাক্রমে মুলা পাইকারি ১৫-২০, খুচরা ২৫, পালং শাক পাইকারি ৪০-৪২ খুচরা ৫০-৫৫ টাকা, লাল শাক পাইকারি ২৫ টাকা খুচরা ৩০ টাকা, তবে বাজারে দেখা মেলেনি শিম, গাজর ও টমেটোর।
এদিকে পটল পাইকারি ৩২ ও খুচরা ৩৫-৪০ টাকা, পেঁপে পাইকারি ১৫ ও খুচরা ২০ টাকা, ওল পাইকারি ৪৫ ও খুচরা ৫৫-৬০ টাকা, কাঁচা কলা পাইকারি ২৮ ও খুচরা ৩৫-৪০, শসা পাইকারি ৪০ ও খুচরা ৪৫-৫০, ধনেপাতা পাইকারি ৮০ ও খুচরা ৯০-১০০ টাকা, উস্তে পাইকারি ৭৫ ও খুচরা ৯০-১০০, মিষ্টি কুমড়া পাইকারি ৫০ টাকা খুচরো ৫৫-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বাজারে এ ছাড়া লাউ, চালকুমড়া পাইকারি ৩০ টাকা যা খুচরো বাজারে ৩৫-৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
তারাগুনিয়া বাজারের খুচরা সবজি বিক্রেতা মতলেব হোসেন বলেন, বাজারে সব সবজির দাম তুলনামূলকভাবে বেশি তবে গত দুদিন একটু কমেছে। দাম বাড়ায় বিক্রিও কমেছে। আগে মানুষ কেজি ধরে কিনলেও এখন পোয়া অথবা গ্রামে ওৎন করে কিনছেন।
বাজারে বেজপুর এলাকা থেকে বাজার করতে আশা সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ সারা দিনে ইনকাম করি ৫০০ টাকা। বাজারে এসে কী কিনব ভেবে কুল পায় না। মিষ্টি কুমড়া ৬০ টাকা কেজি। আর কি কিনে খাব? বড় মাছ-গোস্ত তো ভাবাই যায় না।’
কাইয়ামারি থেকে আশা শামিম নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘বাজারে সবজির এত দাম যে বাজার করা অসম্ভব হয়ে গেছে। এখন বাধ্য হয়ে ৫০০ গ্রাম অথবা ২৫০ গ্রাম করে কেনা লাগছে।
উপজেলার ডাংমড়কা থেকে বাজার করতে আশা সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ। সবজি কেনার সামর্থ্যও হারিয়ে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, বাজারে পর্যাপ্ত সবজির সরবরাহ আছে। এই উপজেলার সবজি বাইরে অন্যান্য উপজেলায় যায়। কয়েক দিনের তুলনায় সবজির দাম সামান্য কমেছে। দাম যেটুকু বেড়েছে সিন্ডিকেটর কারণে বলে তিনি জানিয়েছেন।

বাজার তদারকির বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওবায়দুল্লাহ বলেন, বাজারদর নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার মনিটরিং কাজ চলমান আছে।

প্রিয় পাঠক, আপনার স্বরচিত আর্টিলে আত্রাই বার্তায় প্রকাশ করতে নিবন্ধন করুণ । আপনার প্রতিভা তুলে ধরুন বাঙালিয়ানদের সাথে। যে কোন বিষয়ে জানতে ও পরামর্শ নিতে যোগাযোগ করুণ।


আর্টিকেল শেয়ার করুন

আরও খবর