দুইমাস বয়সী শিশু বখতিয়ার সজল। জন্ম থেকেই ঠোঁট কাটা মুখ, এক চোখে পৃথিবী দেখছে। নাক দিয়ে নিশ্বাস নিতে পারে না। এক চোখ অন্ধ, মুখ দিয়েই টানছে নিশ্বাস। বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের সিধইল গ্রামের উত্তর সুখানগাড়ী এলাকার দিনমজুর বাদশা মিয়ার স্ত্রী সুর্য খাতুনের গর্ভে জন্ম নেয়া শিশুর চিকিৎসা অর্থের অভাবে বন্ধ।
পরিবার সামর্থ্যটুকু দিয়ে শিশুটিকে নিয়ে বেশকয়েকটি হাসপাতালে ঘুরেছেন। শিশুর উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। কিন্তু দিনমজুর পিতা অর্থের অভাবে শিশুপুত্রের চিকিৎসা করাতে পারছেন না। শেষ চেষ্টা হিসেবে উন্নত চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তার আবেদন নিয়ে অসহায় পরিবারটি সরকারি বিভিন্ন দফতর ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে ঘুরছেন। শিশুর চিকিৎসা সহায়তা চেয়ে গত বুধবার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত আবেদন করা হয়। চিকিৎসা সহায়তার জন্য বিত্তবান, প্রবাসী, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা ও সমাজ সেবকদের কাছে সহযোগিতা কামনা করেছেন শিশুটির পিতা। কেউ আর্থিক সহযোগিতা করতে চাইলে ০১৭৪৪৮৬৫৬০৮ নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
স্থানীয়রা ও পরিবার জানায়, সিধইল গ্রামের উত্তর সুখানগাড়ী এলাকার দিনমজুর বাদশা মিয়ার স্ত্রী সুর্য খাতুন গত ২৮ জুন ওই শিশুর জন্ম দেন। বগুড়ার একটি ক্লিনিকে শিশুটি জন্মের পর থেকেই প্রতিবন্ধী। একটি চোখ দিয়েই পৃথিবীর আলো দেখছে। বাম চোখ অন্ধ, যেন চোখ উপড়ে উঠেছে। শিশুর মুখ কাটা, নাক দিয়ে নিশ্বাস নিতে পারে না। কাটা মুখ দিয়েই টেনে টেনে নিশ্বাস নেয়। যে কেউ শিশুটিকে সরেজমিনে দেখলে আবেগাপ্লুত হবেন।
শিশু বখতিয়ার সজলের পিতা দিনমজুর বাদশা মিয়া জানায়, অভাবের সংসারে খুব কষ্টে দিন যায়। থাকারমতো বাড়ি ছাড়া কোনো সম্পত্তি নেই। প্রথম পুত্রের বয়স ১০ বছর। দ্বিতীয় পুত্র জন্মের পর থেকেই অসুস্থ। পরিবারের সামর্থ্যটুকু দিয়ে সন্তানের চিকিৎসা করার চেষ্টা করেছেন। বিভিন্ন এনজিও এবং ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা ঋণ নিয়ে বগুড়ার বেশকয়েকটি হাসপাতালে সন্তানের চিকিৎসার জন্য ঘুরেছেন। চিকিৎসকরা ওই পরিবারকে জানিয়েছে, ঢাকায় নিয়ে উন্নত চিকিৎসা করালে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে শিশু বখতিয়ার সজল। কিন্তু দিনমজুর পিতার পক্ষে চিকিৎসা খরচ বহন করা অসম্ভব। বর্তমানে অর্থের অভাবে শিশুর চিকিৎসা বন্ধ। বাড়িতে মায়ের কোলে শিশুটি কাঁদছে আর কাটা মুখ দিয়ে নিশ্বাস টানছে।
দিনমজুর পিতা আবেগাপ্লুত কন্ঠে বলেন, নাক দিয়ে নিশ্বাস নিতে পারলেই বখতিয়ার সুস্থ হয়ে উঠবে। সন্তানের মুখ যতোবার দেখি, ততোবার চোখে পানি চলে আসে। প্রতিবেশীরাও দেখতে এসে কেঁদে ফেলেন।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. হুমায়ুন কবির বলেন, বিষয়টি জেনেছি। শিশুটির চিকিৎসার জন্য সহযোগিতা করার চেষ্টা করবো।
প্রিয় পাঠক, আপনার স্বরচিত আর্টিলে আত্রাই বার্তায় প্রকাশ করতে নিবন্ধন করুণ । আপনার প্রতিভা তুলে ধরুন বাঙালিয়ানদের সাথে। যে কোন বিষয়ে জানতে ও পরামর্শ নিতে যোগাযোগ করুণ।