শিক্ষাঙ্গন

প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ট্যাব বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ

মাসুদ রানা

মাসুদ রানা

প্রকাশ : ১৭ এপ্রিল, ২৩ আপডেট : ২১ নভেম্বর, ২৪

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় ৯ম-১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ট্যাব বিতরণে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সরকারী নির্দেশনা অমান্য করে ট্যাব গ্রহণকারীর তালিকা প্রণয়নে স্বজনপ্রীতি বিষয়ে উপজেলার খানসামা সরকারী মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, কালিতলা উচ্চ বিদ্যালয় ও কুমড়িয়া দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩ জন শিক্ষার্থী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।

জানা যায়, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন জনশুমারি ও গৃহগণনা প্রকল্প-২০২১ থেকে পাওয়া ট্যাবলেট (ট্যাব) প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে খানসামা উপজেলার ৪৭টি প্রতিষ্ঠানের নবম ও দশম শ্রেণির ২৮২ মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী ৯ম ও ১০ম শ্রেণীর রোল অনুযায়ী প্রথম ৩জন শিক্ষার্থীকে ট্যাব দেওয়ার কথা থাকলেও প্রধান শিক্ষকরা নিজের পছন্দে তালিকা তৈরী করে উপজেলায় প্রেরণ করেন।

সেই অনুযায়ী রবিবার (১৬ এপ্রিল) উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিসংখ্যান কার্যালয়ের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স হলরুমে ট্যাব বিতরণ করার পরে বিষয়টি জানাজানি হলে ট্যাব বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

কালিতলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মোছাঃ ইশরাত জাহান বলেন, আমি একজন ৯ম শ্রেণির ছাত্রী। আমার রোল নম্বর- ০৩ (মানবিক বিভাগ)। আমার বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্র/ছাত্রীদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার নিয়ম অনুযায়ী ১ হতে ৩ নম্বর রোল ধারীদের দেয়ার নিয়ম থাকলেও তাহা না দিয়ে একই ক্লাসের ৬ নম্বর রোল ধারী ছাত্রী মোছা: রাব্বিনা কে উক্ত উপহারের ট্যাবটি প্রদান করেন অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আব্দুল মান্নান। যাহা নিয়ম বর্হিভূত।

কুমড়িয়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ০৩ রোলের শিক্ষার্থী লুবনা জাহান লিশাত দুঃখের সহিত বলেন, সরকারী ভাবে উচ্চ বিদ্যালয়ে ১, ২ ও ৩ নং রোল ধারীদের বিনামূল্যে ট্যাব প্রদান করা হচ্ছে। কিন্তু দুখের বিষয় এই যে, আমার ক্লাস রোল- ০৩ হওয়া স্বত্বেও আমাকে ১টি ট্যাব প্রদান না করে উক্ত নবম শ্রেনির ছাত্র যার ক্লাস রোল নং-০৩ এর পরের ছাত্রকে উক্ত ট্যাব প্রদান করা হয়েছে।

কালিতলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান এই প্রতিবেদককে বলেন ইশারত জাহান অনিয়মিত একজন ছাত্রী ও মেয়েটির বিয়ে হয়ে যায়। ট্যাপ নেওয়ার জন্য তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে তার পরিবার সাড়া দেয়নি। সেই কারণেই ৬ রোলের শিক্ষার্থীকে ট্যাব দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে খানসামা সরকারী পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, ২৩ রোলের ঐ ছাত্রী গরীব ও মেধাবী হওয়ায় তাকে আমরা ট্যাব দিয়েছি। তবে অভিযোগ হওয়ার পর সেই ট্যাব ফেরত নিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। আর সেই ছাত্রীকে স্কুল থেকে একটি ল্যাপটপ কিনে উপহার দেয়া হবে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মঞ্জুরুল হক বলেন, সরকারী পরিপত্র অনুযায়ী স্কুল থেকে প্রেরিত তালিকা অনুযায়ী ট্যাব বিতরণ করা হয়েছে। তবে এই তালিকায় যদি কোন অসংগতি থাকে সেটা তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাশিদা আক্তার বলেন, ট্যাব বিতরণে অনিয়মের অভিযোগে ৩টি লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঐ ৩ প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শনানোর নোটিশ প্রেরণ করা হবে এবং পরিপত্র অনুযায়ী ট্যাব বিতরণ নিশ্চিত করা হবে।

প্রিয় পাঠক, আপনার স্বরচিত আর্টিলে আত্রাই বার্তায় প্রকাশ করতে নিবন্ধন করুণ । আপনার প্রতিভা তুলে ধরুন বাঙালিয়ানদের সাথে। যে কোন বিষয়ে জানতে ও পরামর্শ নিতে যোগাযোগ করুণ।


আর্টিকেল শেয়ার করুন

আরও খবর